স্বপ্নবতা


বাস্তবতার উল্টা কি স্বপ্নবতা?

জাগার বিপরিত ঘুম, তাই যদি হয় বাস্তবের বিপরিত তো স্বপ্ন হতেই পারে।

আচ্ছা আমি কি এখন স্বপ্ন দেখছি না যেগে আছি। কিভাবে বুঝব? স্বপ্ন নাকি রংহীন কে বলছে এই কথা? এইতো আমি সবুজ ঘাস দেখতে পাচ্ছি। আচ্ছা ঘাস আসলো কোথা থেকে? আমি কোথায় এখন?

হুম এইটা একটা মাঠ।

সেতো দেখতেই পাচ্ছি।

কিন্তু এখানে কেন আমি?

আরে ধুর স্বপ্নের কোন আগা মাথা থাকে নাকি? এখন মাঠে আছো একটু পরে দেখবা ছাদে এই তো স্বপ্ন।

কিন্তু আমি যে স্বপ্নই দেখছি কে বলল?

হুম প্রমান করা যায়।

কিভাবে? চিমটি কেটে?

আরে নাহ ওইসব ভুয়া স্বপ্নে চিমটি কাটলে কারো ঘুম ভাঙেনা। তাহলে?

খুব সহজ এইযে তুমি আমার সাথে কথা বলছ, আসলে তুমি তো আমিই আবার আমিই তুমি, কিন্তু কত সুন্দর কথা বলছ, বাস্তব হলে কি পারতে?

কেন পারতাম না?

নাহ। বাস্তবে তোমার স্বত্বা এক। কিন্তু পরাবাস্তবে তুমি অনেক। অনেক স্বত্বা।

অনেক? কই আমি তো সুধু তোমার সাথেই কথা বলছি। আর কই?

এইতো আমরা।

তোমরা? তোমরা কারা?

আমরাই তুমি। তুমিই আমরা।

আচ্ছা আমি পাগল হয়েগেছি না তো?

দুনিয়ার কেউ পাগল না।

তাহলে পাগল কারা?

যারা বাস্তবতা থেকে স্বপ্নবতায় চলে যায় তাদেরই তোমরা নাম দিয়েছ পাগল। তাদের কাছে বাস্তবতাটাই স্বপ্নের মত। তারা স্বপ্নের মধ্যই তাদের নিজের জগৎ তৈরিকরে সেখানেই বাস করে। তোমরা যেমন স্বপ্ন দেখ ওরা তেমনি বাস্তব দেখে।

তাই?

হ্য স্বপ্নে তুমি যত জনকেই দেখ সবাই আসলে তুমি। তোমারই স্বত্বা বিভিন্ন চরিত্রে। এইজন্যই তুমি তাদের নিয়ন্ত্রন করতে পার, এই জন্যই তুমি তাদের অনুভুতি বুঝতে পার যখন স্বপ্ন দেখ।

বুঝলাম কিন্তু তুমি মানে তোমরা মানে আমি এত সব জানি কিভাবে?

বাস্তবে হয়তো জান না। কিন্তু স্বপ্নে তুমি সব জান।

কিভাবে?

স্বপ্নের হল এক এবং অসিম। এখানে জ্ঞানের যেমন কোন সীমা নেই তেমন স্থান কালেরও কোন ব্যাবধান নেই। তুমি কি জান বাস্তব দুনিয়ায় যা কিছু আবিষ্কার হয়েছে তার বেশিরভাগ হয়েছে স্বপ্ন থেকে?

হ্যা কোথায় যেন শুনেছিলাম।

হুম এর কারন হল স্বপ্নের জগতের কোন বাধা নেই। জ্ঞান সময়ের বাধা কাটিয়ে সামনে পেছনে প্রবাহিত হতে পারে।

মানে কি বুঝিনাই।

মানে হল, ধর যেই জ্ঞান ২০০ বছর পরে হওয়ার কথা ছিল স্বপ্নে প্রবাহিত হয়ে তা আজকেই তেমার কাছে ধরা দিতে পারে। তুমি যদি ঠিকঠাক তা বাস্তবে নিয়ে যেতে পার তবে তুমি বাস্তবকে ২০০ বছর এগিয়ে দিলে। বিজ্ঞানিদের সাথে এটাই ঘটে। তারা সচেতন ভাবেই স্বপ্নবতায় বিচরন করে। জ্ঞানের সীমা পার করে। বাস্তবতাকে এগিয়ে নেয়।

দাঁড়াও দাঁড়াও তুমি বলতে চাইছ সব বিজ্ঞানী স্বপ্ন থেকে তাদের থিওরি পায়?

হ্যা।

তাহলে পাগলরাই তো বড় বিজ্ঞানী হওয়ার কথা ছিল। তারা নাকি স্বপ্নেই থাকে তোমার কথা মত?

ভাল প্রশ্ন। ওই যে বল্লাম তুমি যা পেলে স্বপ্নে তা ঠিকঠাক ভাবে বাস্তবে নিতে হবে। যারা স্বপ্নবতাকেই বাস্তবতা ভাবতে শুরু করে তোমার ভাষয় পাগল তারা তা পারে না। কারন তাদের কাছে কোনটা আসল এইটাই পরিষ্কার না।

হুম। বুঝলাম।

তুমি কি জান মানব সভ্যতা কেন এত উন্নত হল? কেন অন্য প্রানীরা পারল না? কেন ডাইনোসরের মত প্রানী প্রায় ১৭০ মিলিয়ন বছর পৃথিবীতে বেচে ছিল অথছ বুদ্ধিমতা অর্জন করতে পারেনি সেখানে মানুষ মাত্র ৭ থেকে ৮ মিলিয়ন বছরে এত বুদ্ধিমান প্রানীতে পরিনত হল?

কেন?

কারন মানুষ যখন থেকে স্বপ্ন দেখা শিখল তখন থেকে তারা এগিয়ে গেল, জ্ঞান বিজ্ঞান, প্রযুক্তিতে। সবকিছুর পেছনে ছিল স্বপ্ন।

কি সব বলছ আগা মাথাহীন কথাবার্তা।

তুমি স্বপ্ন দেখছ আগা মাথাহীন হওয়াই সাভাবিক। আগেই তো বলেছি স্বপ্নবতায় স্থান কালের কোন বাধা নেই।

ধুর ভাল্লাগছে না তোমার হাবিজাবি বকবকানি।

ওকে যাও, এমনিও তোমার ঘুম ভাঙার সময় হয়েগেছে। বাস্তবতায় প্রবেশ কর। ভাল থেক।

কি জালা নিজেকে নিজে এইভাবে বলে?

হ্যা বলা যায় কারন আমি তোমার অন্য স্বত্বা ঠিক তুমি না।

হইছে আমার মাথা ব্যাথা হয়ে যাবে বেশি ভাবলে।

স্বপ্নবতায় মাথা ব্যাথা হওয়ার উপয় নেই কারন তোমার মস্তিষ্ক তো বিস্রামে আছে এখন। আচ্ছা যাও এখন। বাস্তবে প্রবেশ কর।


আওয়াজ হচ্ছে কোথায় এত জোরে? আহ্ একভাবে বেজেই যাচ্ছে, থামার নাম নেই। আবার স্বপ্ন? 

ওহ এলার্ম! তাই তো। কই মোবাইলটা কই রাখলাম। এইতো। ওহ তাহলে স্বপ্নই ছিল ওটা? উফ্ কি আজব স্বপ্ন রে বাবা। 

Comments

Popular posts from this blog

সুর গহীনে

ফেসবুক পরিচিতি