ফর্সা নাকি কালো? কিভাবে কেন?




এই এড টা দেখে মাথায় আসলো আসলেই তো বাচ্চা ফর্সা হবে না কালো এইটা কার গায়ের রং এর উপর ডিপেন্ড করে? বাবার নাকি মায়ের? যেহেতু গায়ের র: জেনেটিক ব্যাপার অবস্যই বাবা মায়ের রংএর উপর নির্ভর করবে। তাই একটু নেট ঘাটলাম (আমার আবার কিছু হইলেই নেট ঘাটার অভ্যাস)। ঘেটে যেইটা জানলাম খুবই ইন্টারেস্টিং ব্যাপার। যেটা আগে জানতাম না। আমার ধারনা অনেকেই আমার মত বিষয় টা জানে না। না হলে এত বড় কোম্পানি বিলবোর্ড জুড়ে এই বিজ্ঞাপন দিত না। 

আমরা মোটামুটি সবাই জানি (যারা এসএসসি তে বায়লজি ছিল অন্তত) আমাদের প্রতিটা কোষের নিউক্লিয়াসের মধ্যে থাকে ডিএনএ (DNA)। এই ডিএনএ এর মধ্যেই আমাদের ডিজাইন এর কোড টা লেখা থাকে (মানুষের ক্ষেত্রে তা প্রায় ৬০কোটি)। একটা DNA মোটামুটি ৬ফিট লম্বা হয় নিউক্লিয়াসের মধ্যে প্যাচায়গুচায় থাকে (হেডফোনের তারের মত)। এই DNA আবার ৪৬টা ভাগে ভাগ করা থাকে। প্রতিটা কে বলে ক্রোমজম। এর ২৩টা হল বাবার আর ২৩ টা হল মায়ের। এই পর্যন্ত আমরা সবাই জানি।

এখন এই ২৩ জোড়া ক্রোমোজোমের মধ্যো মাত্র এক জোড়া মানে ২টা ক্রোমজম আছে যাদের কারহনে আমরা ছেলে অথবা মেয়ে। বাকি গুলা অন্যান্য কাজে যেমন চোখ কান নাক হাত পা হাড্ডিগুড্ডি এসবের ব্যাপার স্যাপার থাকে। এখন ঘাপলা হল এই লাস্ট ২ক্রোমজম এ। ক্রোমজম দুইটার আবার দুইটা নাম আছে x আর y। ছেলেদের ক্রোমজম জোড়া হয় xy আর মেয়েদের জোড়া হয় xx। এইটাও আমরা মোটামুটি জানি। কিন্তু জানি না যেইটা সেইটা হল এই দুই ক্রোমজমের মধ্যে শুধুমাত্র x ক্রোমজম এ গায়ের রং কি হবে তার কোড টা লেখা থাকে। যার ফলে খুব একটা ইন্টারেস্টিং ব্যপার ঘটে যখন একটা বাচ্চা জন্ম নেয়।

বাচ্চা টা যদি ছেলে হয় তাহলে মায়ের দুইটা xx ক্রোমোজম থেকে যেকোন একটা x আর বাবার xy ক্রোমজমের মধ্যে থেকে অবস্যই y টা নিয়ে নতুন xy ক্রোমজম জোড় তৈরি করে। আর যেহেতু x ক্রোমজমই গায়ের রং নির্নয় করে বলাই যায় ছেলে টার গায়ের রং আসলে মায়ের জিন থেকে আসা অর্থাৎ মায়ের রংটাই তার (একেবারে মায়েরই হবে না বলে বলা যায় মায়ের বংশধারার রং কারন মায়ের xx এর একটা আবার তার মায়ের এবং অন্যটা তার বাবার)। আর যেহেতু বাবার রং ছিল তার x ক্রোমজমে যেটা সে ছেলে হওয়ায় তার কাছে আসেই নাই সুতরাং বলাই যায় ছেলের রং এর উপর বাবা বা তার বংশের কোন প্রভাব নেই।

আর যদি বাচ্চা টা মেয়ে হত তখন তার তো দুইটাই x ক্রোমজম, অর্থাৎ একটা ক্রোমজম মায়ের দুইটা থেকে আসা অন্য টা বাবার এক মাত্র x ক্রোমোজমটাই। এখন তাহলে কি হবে? দুইজনের গায়ের রংএর কোডই তো উপস্থিত বাচ্চাটার কোষে। গবেশনায় বিজ্ঞানিরা যেটা দেখছে প্রথমে সব কোষে দুইটা ক্রোমজমই একটিভ থাকে কিন্তু ধিরে ধিরে কিছু কোযে মায়ের x ক্রোমজম টা একটিভ হয়ে যায় এবং বাবার টা ইন একটিভ হয়ে যায় আর কিছু কোষে ঘটে বিপরিত মানে বাবার টা হয় একটিভ আর মায়ের টা হয় ইনএকটিভ। এই বিষটা ঘটে যখন বাচ্চার মাত্র ১০০ টা মত কোষ গঠন হয় তখন। ফলে পুর্ণাঙ্গ মেয়ে বাচ্চা যখন হয়ে যায় তখন তার প্রায় অর্ধেক কোষের x ক্রোমজম হয় বাবার টা একাটিভ আর বকি অর্ধেক হয় মায়ের টা একটিভ। ফলে তার গায়ের রং হয় বাবা মায়ের রং এর মিক্স। কি দারুন না বিষয় টা? 

[এর সবচেয়ে ভাল উধারন হল বিড়াল। একটা বিড়াল যদি দুই রংএর হয় তবে অবস্যই সেইটা একটা মেয়ে বিড়াল (এইটাও আমি জানতাম না!)। ছেলে বিড়াল সব সময় এক রংএর হয় এবং সেইটা মায়ের রং।]

 

**এখন ওই এড টার মেয়ে টারে বলাই যায় আরে টেনশনের কি আছে ছেলে হইলে তোমার রং আর মেয়ে হইলে তোমার আর তোমার হাজবেন্ডের গায়ের রংয়ের মিক্স। সোজা হিসাব -_- ! এইডাই হইল একদম আসল ফ্রেস চিন্তা। তার জন্য সাবান মাখার দরকার নাই একট আধটু সাইন্স জানলেই চলে! ;)

Comments

Popular posts from this blog

সুর গহীনে

স্বপ্নবতা

ফেসবুক পরিচিতি